ঈদ আসন্ন। আমরা অনেকেই বাড়ি যাব বা যাচ্ছি।
আমাদের অনেকেরই বেঁড়ে ওঠা গ্রামে। গ্রামের শীতল জলে হেসে-খেলে দিন কেটেছে। কত গাছ-গাছালির সাথে মিতালী ছিল সেই ছোটবেলায়। গাছে চড়ে বসে থাকতাম কতইনা। অনেক সুন্দর সুন্দর আবার অনেক নাম না জানা অচেনা ফলের সুবাস নিয়েছি। অনেক কিছুই ভুলে গেছি বা যাচ্ছি।
আমার ইচ্ছা ছিল সামুতে ফল নিয়ে ধারাবাহিক লিখব। কয়েকটা লিখেছিও। কিন্তু সময় স্বল্পতা আর আলসেমীর কারনে হয়ে ওঠে না। দোষ আমারই। যারা নিয়মিত পড়ছিলেন তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেই।
আজকে যে ফলটি নিয়ে বলব সেটি আসলে ভীষণ অপরিচিত। অনেকেই হয়তঃ খেয়েছি কিন্তু নাম জানি না-আবার অনেকেই হয়তঃ দেখেননি জীবনে কখনো। হা আমি কাউফলের কথা বলছি।
বাংলা নামঃ কাউ (কুমিল্লা) /কাউয়া (সিলেট, মৌল্ভীবাজার) /কাউ-গোলা (চাকমারা বলে থাকে) /কাগলিচু/তাহগালা (মারমা)/ক্যাফল (বাগেরহাট)।
ইংরেজী নামঃ Cowa (mangosteen)
বৈজ্ঞানিক নামঃ Garcinia cowa
গাছটির রঙ একটু কালো। মাঝারী বৃক্ষ।
যারা ঈদে গ্রামে যাচ্ছেন খেয়াল করে দেখবেন-বেশী মোটা নয়, গাছের রংটা কিছুটা কালো, ডালপালা একদম কম, গাছের আগার দিকে ঝুপড়ির মতো কিছু ডাল-পালা দেখা যায়। সাধারনতঃ হেলে থাকে না-খালের কিনারায়, পুকুরের কিনারায় থাওলে হেলে থাকে। জঙ্গলে বেশী দেখা যায়। দেখুননা ছবির সাথে মিলিয়ে চোখে পরে কিনা!!
এতো গেলো গাছের বর্নণা। এবার আসি ফলের বর্নণায়। ফলটি কাচা অবস্থায় গাঢ় সবুজ। সাইজ একটা টেবিল টেনিস বলের (পিংপং) সমান থেকে সামান্য বড় হতে দেখা যায়। পাকা ফল হলুদ বা কমলা রঙ এর হয়। ফলের ভিতরে ৪/৫টি দানা থাকে। ফল পাকার পর এই দানা চুষে খেতে হয়।
ফলটির স্বাদ টক—শুধু টক বললে ভুল হবে, অনেক বেশী টক। কিন্তু খেতে ভাল লাগে।
খাদ্য হিসেবে কাউফলঃ
ছোটবেলায় আমার মা পাকা কাউফলের খোসা চির চির করে কেটে সাথে মোলা মাছ বা অন্য ছোট মাছ দিয়ে টক রান্না করতেন। কি যে ভাল লাগতো!! এখনো মুখে লেগে আছে। পরেরবার দেশে গেলে মা’কে বলব যেন আবারো এই টক রান্না করে দেন (আমাদের বাড়িতে ২টা কাউফল গাছ আছে কিনা)।
পাকা কাউফলের রসালো দানাগুলো খুলে নিয়ে মরিচের গুড়া, লবন, সামান্য দুধ, সামান্য চিনি দিয়ে ভর্তা করে খেতে খুব ভাল লাগে। আমি নিশ্চিত আপনাদের অনেকেরি মুখে পানি এসে গেছে--হেহেহেহেহেহে।
ঔষধিগুনঃ
সর্দিজ্বর ও ঠান্ডা প্রশমনে কাউফল উপকারী। এছাড়া এটি অরুচি দূর করে।
জাতঃ
বাংলাদেশে কাউফলের অনুমোদিত কোন জাত নেই।
উতপাদন এলাকাঃ
সিলেট, মৌলভীবাজার, খাগড়াছড়ি আর রাঙ্গামাটিতে এই ফল হতে দেখা যায়। কুমিল্লা অঞ্চলেও আমি এ ফলটি হতে দেখেছি। বাগেরহাটেও প্রচুর হয়।
গাছটি বিলুপ্তপ্রায়। আজ থেকে ১০/১৫ বছর পরে হয়তঃ আমাদের দেশে আর দেখা যাবে না। তাই আপনারা যারা ঈদে দেশে যাচ্ছেন, কারো চোখে যদি ধরা পরে তাহলে দেরী না করে সংরক্ষনের ব্যাবস্থা করবেন। কাজটি কঠিন নয়। ভাল পাকা একটা ফলের বীজ রেখে দিন। কিছুদিন পর পাটিতে পুতে দিন। গাছ হয়ে যাবে।
তথ্য সুত্রঃ কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামার বাড়ি, ঢাকা; হর্টিকালচার এন্ড পোস্ট হারভেষ্ট টেকনোলজী বিভাগ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা; ইন্টারনেট
ছবি সুত্রঃ কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামার বাড়ি, ঢাকা; ফেসবুক; ইন্টারনেট
আমাদের অনেকেরই বেঁড়ে ওঠা গ্রামে। গ্রামের শীতল জলে হেসে-খেলে দিন কেটেছে। কত গাছ-গাছালির সাথে মিতালী ছিল সেই ছোটবেলায়। গাছে চড়ে বসে থাকতাম কতইনা। অনেক সুন্দর সুন্দর আবার অনেক নাম না জানা অচেনা ফলের সুবাস নিয়েছি। অনেক কিছুই ভুলে গেছি বা যাচ্ছি।
আমার ইচ্ছা ছিল সামুতে ফল নিয়ে ধারাবাহিক লিখব। কয়েকটা লিখেছিও। কিন্তু সময় স্বল্পতা আর আলসেমীর কারনে হয়ে ওঠে না। দোষ আমারই। যারা নিয়মিত পড়ছিলেন তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেই।
আজকে যে ফলটি নিয়ে বলব সেটি আসলে ভীষণ অপরিচিত। অনেকেই হয়তঃ খেয়েছি কিন্তু নাম জানি না-আবার অনেকেই হয়তঃ দেখেননি জীবনে কখনো। হা আমি কাউফলের কথা বলছি।
বাংলা নামঃ কাউ (কুমিল্লা) /কাউয়া (সিলেট, মৌল্ভীবাজার) /কাউ-গোলা (চাকমারা বলে থাকে) /কাগলিচু/তাহগালা (মারমা)/ক্যাফল (বাগেরহাট)।
ইংরেজী নামঃ Cowa (mangosteen)
বৈজ্ঞানিক নামঃ Garcinia cowa
গাছটির রঙ একটু কালো। মাঝারী বৃক্ষ।
যারা ঈদে গ্রামে যাচ্ছেন খেয়াল করে দেখবেন-বেশী মোটা নয়, গাছের রংটা কিছুটা কালো, ডালপালা একদম কম, গাছের আগার দিকে ঝুপড়ির মতো কিছু ডাল-পালা দেখা যায়। সাধারনতঃ হেলে থাকে না-খালের কিনারায়, পুকুরের কিনারায় থাওলে হেলে থাকে। জঙ্গলে বেশী দেখা যায়। দেখুননা ছবির সাথে মিলিয়ে চোখে পরে কিনা!!
এতো গেলো গাছের বর্নণা। এবার আসি ফলের বর্নণায়। ফলটি কাচা অবস্থায় গাঢ় সবুজ। সাইজ একটা টেবিল টেনিস বলের (পিংপং) সমান থেকে সামান্য বড় হতে দেখা যায়। পাকা ফল হলুদ বা কমলা রঙ এর হয়। ফলের ভিতরে ৪/৫টি দানা থাকে। ফল পাকার পর এই দানা চুষে খেতে হয়।
ফলটির স্বাদ টক—শুধু টক বললে ভুল হবে, অনেক বেশী টক। কিন্তু খেতে ভাল লাগে।
খাদ্য হিসেবে কাউফলঃ
ছোটবেলায় আমার মা পাকা কাউফলের খোসা চির চির করে কেটে সাথে মোলা মাছ বা অন্য ছোট মাছ দিয়ে টক রান্না করতেন। কি যে ভাল লাগতো!! এখনো মুখে লেগে আছে। পরেরবার দেশে গেলে মা’কে বলব যেন আবারো এই টক রান্না করে দেন (আমাদের বাড়িতে ২টা কাউফল গাছ আছে কিনা)।
পাকা কাউফলের রসালো দানাগুলো খুলে নিয়ে মরিচের গুড়া, লবন, সামান্য দুধ, সামান্য চিনি দিয়ে ভর্তা করে খেতে খুব ভাল লাগে। আমি নিশ্চিত আপনাদের অনেকেরি মুখে পানি এসে গেছে--হেহেহেহেহেহে।
ঔষধিগুনঃ
সর্দিজ্বর ও ঠান্ডা প্রশমনে কাউফল উপকারী। এছাড়া এটি অরুচি দূর করে।
জাতঃ
বাংলাদেশে কাউফলের অনুমোদিত কোন জাত নেই।
উতপাদন এলাকাঃ
সিলেট, মৌলভীবাজার, খাগড়াছড়ি আর রাঙ্গামাটিতে এই ফল হতে দেখা যায়। কুমিল্লা অঞ্চলেও আমি এ ফলটি হতে দেখেছি। বাগেরহাটেও প্রচুর হয়।
গাছটি বিলুপ্তপ্রায়। আজ থেকে ১০/১৫ বছর পরে হয়তঃ আমাদের দেশে আর দেখা যাবে না। তাই আপনারা যারা ঈদে দেশে যাচ্ছেন, কারো চোখে যদি ধরা পরে তাহলে দেরী না করে সংরক্ষনের ব্যাবস্থা করবেন। কাজটি কঠিন নয়। ভাল পাকা একটা ফলের বীজ রেখে দিন। কিছুদিন পর পাটিতে পুতে দিন। গাছ হয়ে যাবে।
তথ্য সুত্রঃ কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামার বাড়ি, ঢাকা; হর্টিকালচার এন্ড পোস্ট হারভেষ্ট টেকনোলজী বিভাগ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা; ইন্টারনেট
ছবি সুত্রঃ কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামার বাড়ি, ঢাকা; ফেসবুক; ইন্টারনেট
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন